হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে কটূক্তি করা যাবে না: ইউরোপিয়ান কোর্ট
Posted by: নিউজ রুম
ইস’লামের নবী হযরত মুহাম্ম’দ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’কে কটূক্তি করা যাবে না এবং সকল ধ’র্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে বলে এক আদেশ জারি করেছে ইউরোপিয়ান কোর্ট অব হিউম্যান রাইটস (ইসিএইচআর)। সংস্থাটি জানায়, সমাজে বিশৃঙ্খলা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে এমন ধ’র্মীয় কটূক্তি করা যাবে না। এটা অন্যায়।২০০৯ সালের অস্ট্রীয় নাগরিক মিসেস এস ‘বেসিক ইনফরমেশন অন ইস’লাম’
শীর্ষক দুটি সেমিনারে মহানবী হযরত মুহাম্ম’দ সা.-এর বিয়ে ও তার স্ত্রী’ আয়েশাকে নিয়ে কটূক্তি করা নিয়ে একটি মা’মলা গড়ায় অস্ট্রীয় আ’দালতে।বৃহস্পতিবার অস্ট্রিয়ার নিম্ন আ’দালতের সাত জন বিচারক রায় দেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’এর নামে কোন কটূক্তি করা যাবে না। অস্ট্রীয় আ’দালতের রায়কে সম’র্থন জানিয়ে ইসিএইচআর জানায়, সকল ধ’র্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা মানুষের দায়িত্ব।
অন্য ধ’র্মের অনুসারিদের অনুভূতিকে সুরক্ষিত রাখতে, সমাজ ও ধ’র্মীয় শান্তি প্রতিষ্ঠায় এই রুল জারি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে অ’ভিযোগ প্রমাণের ভিত্তিতে অ’ভিযুক্ত ওই নারীকে ৫৪৮ ডলার অর্থদ’ণ্ড দেওয়া হয়। অ’ভিযুক্ত ওই নারীর পক্ষ থেকে এ রায়ের বি’রুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে। সুপ্রিম কোর্টও নারীর এ আপিল বাতিল করে দেয়।
সূত্র: আনাদলু এজেন্সি ইস’লাম গ্রহন করলেন বাবরি ম’সজিদ ভাঙতে প্রথম শাবল চালানো শিবসেনা কর্মী বলবীর সিং ঐতিহাসিক বাবরি ম’সজিদ ধ্বংসে নেতৃত্বদানকারী শিবসেনা কর্মী বলবীর সিং ইস’লাম গ্রহণ করে এখন মুহম্ম’দ আমীর। তিনি তার কর্মের প্রায়শ্চিত্ত করতে সংস্কার কর চলেছেন একের পর এক ম’সজিদ। দুই যুগ আগে অযোধ্যায় বাবরি ম’সজিদের গম্বুজে উঠে শাবলের ঘা মা’রা শিবসেনার সক্রিয় কর্মী বলবীর সিং এখন মোহাম্ম’দ আমির।
আল্লার নাম জপেন সব সময়। ভোরে আজান দেন। লম্বা দাড়ি রেখে তিনি এখন পুরো দস্তুর মৌলভি। প্রায়শ্চিত্ত করতে ভেঙে পড়া শ’খানেক ম’সজিদ সংস্কার করতে চান তিনি। এক সময় শিবসেনার সক্রিয় কর্মী বলবীর সিংহ বাবরির মাথায় শাবল চালিয়ে সব খুইয়েছিলেন। বাবা বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। স্ত্রী’ও শোনেননি তার কথা,তার হাত ধরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেননি।
বাবার মৃ’ত্যুর পর বাড়ি ফিরে শুনেছিলেন- বাবা নাকি বলে গিয়েছিলেন তার দ্বিতীয় সন্তানের (বলবীর) মুখ যেন বাড়ির কেউ আর না দেখেন। এমনকী’ বলবীরকে যেন তার বাবার মুখাগ্নিও করতে না দেয়া হয়। বলবীরের বন্ধু যোগেন্দ্র পালেরও একই দশা। ২৫ বছর আগে যিনি বলবীরের সঙ্গেই উঠেছিলেন বাবরির মাথায়। শাবলের ঘায়ে ভেঙেছিলেন ম’সজিদ। বহু দিন আগে তিনিও হয়ে গেছেন পুরোদস্তুর মু’সলিম।
বলবীর জানান, তার পরিবার কোনও দিনই উগ্র হিন্দু ছিলেন না। ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান আর ইংরেজি, এই তিনটি বিষয়ে এমএ ডিগ্রি পাওয়া বলবীর তার মা, বাবা, ভাই, বোনদের নিয়ে ছোটবেলায় থাকতেন পানিপথের কাছে খুব ছোট্ট একটা গ্রামে। বলবীরের বয়স যখন ১০, তখন তিনি ও তার ভাইদের পড়াশোনার জন্য বলবীরের বাবা দৌলতরাম তাদের নিয়ে চলে যান পানিপথে। তার বাবা বরাবরই গান্ধীবাদে বিশ্বা’সী ছিলেন।
তিনি দেশভাগ দেখেছিলেন। তার যন্ত্র’ণা বুঝেছিলেন। তাই আমাদের আশপাশে যে মু’সলিম’রা থাকতেন, উনি তাঁদের আগলে রাখতেন সব সময়। কিন্তু পানিপথের পরিবেশটা ছিল অন্য রকম। হরিয়ানার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা লোকজনরা তেমন ম’র্যাদা পেতেন না পানিপথে। ফলে একটা গভীর দুঃখবোধ সব সময় তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াত বলবীরকে। সেই পানিপথেই একেবারে অচেনা, অজানা আরএসএসের একটি শাখার কর্মীরা বলবীরকে দেখা হলেই ‘আপ’ ‘আপ’ (আপনি, আপনি) বলে সম্বোধন করতেন।
বলবীর বলছেন, সেটাই আমা’র খুব ভালো লেগেছিল। সেই থেকেই ওদের (আরএসএস ) সঙ্গে আমা’র ওঠবোস শুরু হয়। শিবসেনা করতে করতেই বিয়ে করি। এমএ করি রোহতকের মহর্ষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ওই সময় প্রতিবেশীরা ভাবতেন আমি কট্টর হিন্দু। কিন্তু বাবা কোনও দিনই মূর্তি পূজায় বিশ্বা’স করতেন না। আম’রা কোনও দিনই যেতাম না মন্দিরে। বাড়িতে একটা গীতা ছিল ঠিকই, কিন্তু আমি বা আমা’র ভাইয়েরা কেউই সেটা কখনও পড়িনি।
পানিপথে কেউ বাঁ হাতে রুটি খেলেও তখন তাকে ‘মু’সলিম’ বলে হেয় করা হয়। শিবসেনার লোকজনদের কাছ থেকে ‘সম্মান’ পেয়ে তাদের ভালো লেগে যায় বলবীরের। শিবসেনাই তাকে অযোধ্যায় পাঠিয়েছিল বাবরি ভাঙতে। পাঠিয়েছিল বলবীরের বন্ধু যোগেন্দ্র পালকেও। তারা হয়ে যান করসেবক। বলবীর জানিয়েছেন, বাবরি ভেঙে পানিপথে ফিরে যাওয়ার পর সেখানে তাকে ও যোগেন্দ্রকে তুমুল সংবর্ধনা জানানো হয়।
তারা যে দু’টি ইট এনেছিলেন বাবরির মাথায় শাবল চালিয়ে, সেগু’লি পানিপথে শিবসেনার স্থানীয় অফিসে সাজিয়ে রাখা হয়। কিন্তু বাড়িতে ঢুকতেই তেড়ে আসেন বলবীরের বাবা দৌলতরাম। বলবীরের কথায়, বাবা আমাকে বললেন, হয় তুমি এই বাড়িতে থাকবে, না হলে আমি। তো আমিই বেরিয়ে গেলাম বাড়ি থেকে। আমা’র স্ত্রী’ও বেরিয়ে এল না। থেকে গেল বাড়িতেই। ওই সময় ভবঘুরের মতো জীবন কাটিয়েছেন বলবীর।
লম্বা দাড়িওলা লোক দেখলেই ভয়ে আঁতকে উঠতেন তখন। বেশ কিছু দিন পর বাড়িতে ফিরে জানতে পারেন, বাবা মা’রা গিয়েছেন। তিনি বাবরি ভাঙায় যে দুঃখ পেয়েছিলেন বাবা, তাতেই নাকি তার মৃ’ত্যু হয়েছে। এর পর পুরনো বন্ধু যোগেন্দ্রের খোঁজখবর নিতে গিয়ে আরও মুষড়ে পড়েন বলবীর। জানতে পারেন, যোগেন্দ্র মু’সলিম হয়ে গেছেন। যোগেন্দ্র নাকি তখন বলবীরকে বলেছিলেন, বাবরি ভাঙার পর থেকেই তার মাথা বিগড়ে গিয়েছিল।
যোগেন্দ্রর মনে হয়েছিল পাপ করেছিলেন বলেই সেটা হয়েছে। প্রায়শ্চিত্ত করতে গিয়ে তাই মু’সলিম হয়ে যান যোগেন্দ্র। এর পরেই আর দেরি না করে সোনেপতে গিয়ে প্রখ্যাত আলেম মাওলানা কালিম সিদ্দিকির কাছে মু’সলিম ধ’র্মে দীক্ষা নেন বলবীর। হয়ে যান মহম্ম’দ আমির। ‘প্রায়শ্চিত্ত’ করতে বলবীর সিং ওরফে মহম্ম’দ আমির ভেঙে পড়া শ’খানেক ম’সজিদকে মেরামত করতে চান।
বলবীরের দাবি, ১৯৯৩ থেকে ২০১৭, এই ২৪ বছরে উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে মেওয়াটে বেশ কিছু ভেঙে পড়া ম’সজিদ খুঁজে বের করে সেগু’লির মেরামত করেছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের কাছে মেন্ডুর ম’সজিদও স্থানীয় মু’সলমানরে নিয়ে নাকি সংস্কার করেছেন বলবীরই। ২০০৯ সালের ৯ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জে’লার থানারপাড়া থানার অন্তর্গত নতিডাঙ্গা অমীয় স্মৃ’তি বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে এক ইস’লামিক ওয়াজ মাহফিলে এসেছিলেন তিনি।
সেখানে হাজার হাজার মানুষের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। আপনি কেন ইস’লাম ধ’র্ম গ্রহণ করলেন? -আমি বাবরি ম’সজিদ ধ্বংস করার পর পাগল হয়ে গিয়েছিলাম। ইস’লাম ধ’র্ম স’ম্পর্কে জানার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়ি। অবশেষে শান্তিতলে এলাম। আপনার পরিবার? -আম’রা তিন ভাই। সবাই ইস’লাম গ্রহণ করেছি। আর আমা’র ছেলেমেয়ে? মু’সলিম ঘরের ছেলেমেয়েরা আবার মু’সলিম না হয়ে কী’ হবে।
কতজন মিলে বাবরি ম’সজিদ ভেঙেছেন? -মিডিয়া তো লাখ লাখ বলছে। কিন্তু আম’রা বিভিন্ন ভাগে ছিলাম। ৫০০ জন নিয়ে দল। ৭০০ জন নিয়ে দল এভাবে। আমি ওদের নেতৃত্বে ছিলাম। প্রশাসন? -পু’লিশ প্রশাসন নীরব ছিল। তারা আমাদের ম’সজিদ ভাঙার কাজে সাহায্য করেছিল। সেখানে কোনো মু’সলিম যায়নি? -মু’সলমান যাওয়ার উপায় ছিল না।
হিন্দু সেজে গেলেও তাকে উল’ঙ্গ করে পরীক্ষা করা হতো। বাবরি ম’সজিদ ব্যাপারে আপনি এখন কী’ ভাবছেন? -ওটা সম্পূর্ণ সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্ট কী’ রায় দেয় তা দেখার জন্য দেশবাসী অধীর আগ্রহে অ’পেক্ষা করছে। হিন্দু ও মু’সলিম ভাইদের জন্য আপনার মেসেজ কী’? -সব ধ’র্মগ্রন্থে ইস’লাম ধ’র্মের কথা আছে।